ভার্চুয়াল ক্লাসরুম।
এবারের এইচ. এস. সি. তে ব্যতিক্রমী অরিয়েন্টেশন!
ফারজানা নিপা, ঢাবি। | প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ২২:৫০; আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ২৩:০৯

কলেজের প্রথম দিন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা আলাদা অনুভূতি, ভাল লাগা কাজ করে। কিন্তু এবছর করোনার কারনে সব কিছুতেই রয়েছে ভিন্নতা। যারা এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাশ শুরু করল,তাদের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা একেবারেই আলাদা। মুসরাত জাহান কান্তা, বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা কলেজের প্রথম বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আজ শুনব কলেজের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তার কথা।
'আমার জীবনের কিছু ছোট স্বপ্ন আর ইচ্ছে যে এইভাবে আমাকে ধরা দিবে ভাবতে পারিনি। আমার জীবনের গল্পটা খুব ছোট।আমার জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্কুলজীবনে আমার বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমার এস.এস.সি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার পর নিজেকে একটু হালকা লাগছিলো কারণ তখন পড়ার চাপ ছিলোনা। পড়তে না বসলেও কেউ বকবেনা। এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করায় বাবা মা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন। তারা ঠিক করলেন আমাকে ঢাকায় ভর্তি করাবেন। আমি প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু পরে সাহস এলো।
অবশেষে ঢাকার সরকারি বদরুন্নেসা মহিলা কলেজে অনলাইনে ভর্তি হলাম। মনে মনে ইচ্ছে ছিল কলেজে যাব,নতুন ক্লাসরুম,নতুন বন্ধু, নতুন টিচার, নতুন পরিবেশ পাব। কিন্তু সে ইচ্ছেটা আর পূরণ হয়নি। অবশেষে ৬ই অক্টোবর আমাদের কলেজে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। আমি ক্লাস দশম অবধি সবধরনের ডিভাইস থেকে দূরে ছিলাম কিন্তু এই ক্লাসের জন্য ফোন কিনতে হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে যখন মোবাইলের সামনে বসলাম কেন জানি না মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো।অনলাইন ক্লাসের চেয়ে বাস্তবের ক্লাসরুমে বসে ক্লাস করা অনেক আনন্দের। অথচ আমরা এসব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।ফেসবুক,ম্যাসেঞ্জারের কল্যাণে কয়েকজন সহপাঠীর সাথে পরিচয় হয়েছে। কলেজের বেশ কয়েকটা ফেসবুক গ্রুপও খোলা হয়েছে। গ্রুপের সবার সাথে কথা বলে মনটা ভাল রাখার চেষ্টা করি। সত্যি বলতে নতুনকে মানিয়ে নিয়েই তো এগোতে হয়।
তাই যতই ডিভাইসের প্রতি অনীহা থাকুক না কেন নিজে যেন পিছলে না পড়ি সেজন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখছি। ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা এবং অন্যান্য জিনিস সংগ্রহের জন্য এখন পর্যন্ত একবারই কলেজে যেতে হয়েছে। প্রথমদিন কলেজে না থাকতে পারার আক্ষেপটা বোধ হয় আজীবনই থাকবে আমাদের ব্যাচের। আশা করি এই বিষণ্ন দিনগুলো দ্রুতই কেটে যাবে,পা রাখতে পারব আমার ক্যাম্পাসে।সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রার্থনা - আমরা যেন এই মহামারী কাটিয়ে উঠতে পারি
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: