দেশের সীমানা পেরিয়ে সেবার হাত আজ বহির্বিশ্বে;
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশী নারী পুলিশ।
ফারজানা নিপা, ঢাবি। | প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২০ ২০:৪১; আপডেট: ৪ জুন ২০২৩ ১২:২০
নারী আজ স্বয়ংসিদ্ধা। তাঁরা এখন কারও উপরে নির্ভরশীল নয়। উল্টে তাঁদের উপরই নির্ভর করছে কোনো দেশ বা জাতির ভবিষ্যৎ। সেরকমই একটা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের দেখভাল করার দায়িত্ব পেয়েছে বাঙালি নারীরা। লাল সবুজের জয়গান এখন সর্বত্র। বাংলাদেশ পুলিশ ইউনিট হিসাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে নারী পুলিশ কর্মকর্তাদের শীর্ষ অবদান রয়েছে।নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শান্তিরক্ষী মিশনে যোগ দেয় ১৯৯৩ সালে। আর পুলিশ নামিবিয়া মিশনের মধ্য দিয়ে ১৯৮৯ সালে শান্তিরক্ষী মিশনে যাত্রা শুরু করে। এবারই প্রথম জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালিত ডিআর কঙ্গোর কিনসাসা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সুরক্ষার দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যরা।
বিদেশের মাটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরের সুরক্ষার দায়িত্ব পাওয়া দেশের জন্য অনেক বড় সম্মানের। শান্তিরক্ষী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের এটি আরেক নতুন অর্জন। বাংলাদেশ থেকে প্রায় আট হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরের এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় রয়েছেন ব্যানএফপিইউ-১, রোটেশন-১৪ এর শান্তিরক্ষীরা। এটির সুরক্ষা দিতে পেরে পুলিশের নারী শান্তিরক্ষীরা অত্যন্ত গর্বিত। কিছু দিন আগেই জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ফের শীর্ষে উঠে এসেছিল। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে বিশ্বের নানাপ্রান্তে দায়িত্ব পালনকারীরা 'ব্লু হেলমেটধারী' হিসেবে পরিচিত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের প্রতীক 'ব্লু হেলমেট'। কয়েক দশক ধরে শান্তি মিশনে গৌরবের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। শান্তিরক্ষী হিসেবে বিশ্বের নানাপ্রান্তে চ্যালেঞ্জ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন ব্লু হেলমেটধারীরা। রোটেশন-১৪ এর কমান্ডার মেরিনা আক্তার বলেন, 'শুধু দেশের মাটিতে নয়, বিদেশ বিভুঁইয়ে জাতিসংঘের পতাকাতলে অত্যন্ত মর্যাদা ও গর্বের সঙ্গে আমরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। কঙ্গোর এই বিমানবন্দরটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অবশ্যই বিরাট চ্যালেঞ্জ। জাতিসংঘের ম্যান্ডেট মেনে আমরা নির্মোহভাবে কঙ্গোবাসীর জন্য শান্তির অভিপ্রায়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছি।'
বর্তমানে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইথিওপিয়া। ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। ওই বছর ইরান-ইরাক সামরিক পর্যবেক্ষক দলে ১৫ জন সামরিক পর্যবেক্ষক পাঠায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেই থেকে শুরু শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে লাল-সবুজের বাংলাদেশের যাত্রা। এরপর দিন দিনই আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষায় দেশের সাফল্যে নতুন নতুন পালক যুক্ত হয়েছে, যা বিশ্বে বাংলাদেশকে নতুন এক মর্যাদায় নিয়ে গেছে। পুরুষের পাশাপাশি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীরাও নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন।ফলস্বরূপ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে প্রতিনিয়ত মহিলা পুলিশ অফিসারের চাহিদা বাড়ছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: